সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:৩৫ পূর্বাহ্ন
সাাদুল্লাপুর প্রতিনিধিঃ অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ রোকেয়া আক্তার শাম্মী (২২)। তার স্বামী সোহেল রানা (২৭)। ছাত্র-জনতার একদফা আন্দোলনে গিয়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। এখন ৮ মাসের অনাগত সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ছেন এই শাম্মী। গতকাল সাদুল্লাপুর উপজেলার খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়নের বড় গোপালপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়- রোকেয়া আক্তার শাম্মীর আহাজারির দৃশ্য। এসময় স্বামী হারানো শোক আর গর্ভের সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম হতাশায় তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বড় গোপালপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তার সরকারের মেয়ে রোকেয়া আক্তার শাম্মীর দেড় বছর আগে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ভুসকুর মাদরাসাপাড়ার ফেরদৌস রহমানের ছেলে সোহেল রানার সঙ্গে বিয়ে হয়। দাম্পত্ত জীবনে শাম্মী আক্তার এখন ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এ অবস্থায় ঢাকার একটি সিকিউরিটি সার্ভিস আমদানি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি নেয় সোহেল রানা। এরই মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনে দেশ যখন উত্তাল, তখন সোহেল রানাও ঝাঁপিয়ে পড়েন। একপর্যায়ে গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকার শেখ হাসিনা পতনের একদফা আন্দোলনে গিয়ে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সোহেল রানা। এরপর ৬ আগস্ট ভুসকুর মাদরাসাপাড়ার পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তখন থেকে শ্বশুর-শাশুরির অবহেলার শিকার হয় অন্তঃসত্ত্বা শাম্মী আক্তার। বাধ্য হয়ে বাবার বাড়ি সাদুল্লাপুরে অবস্থান করছেন। এ পর্যন্ত শ্বশুর বাড়ির লোকজন খোঁজ রাখেনি শাম্মীর। এমন কি শহীদের স্ত্রী হিসেবেও কোন রাজনৈতিক কিংবা দানশীল ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান শাম্মীর পাশে দাঁড়ায়নি। বর্তমানে স্বামীকে হারিয়ে নির্বাক। গর্ভের সন্তান নিয়ে বারবার বাকরুদ্ধ হচ্ছেন। অনাগত এই সন্তান নিয়ে কীভাবে চলবেন সেই প্রশ্ন তার চোখে-মুখে।
এ বিষয়ে রোকেয়া আক্তার শাম্মী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, শেখ হাসিনা সরকার পতনে একদফা আন্দোলনে গিয়ে আমার স্বামী সোহেল রানা পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। আর এই আন্দোলনের পর দেশে বিজয় উল্লাস হলেও থামছে না আমার চোখর পানি। এখন আমার অনাগত সন্তানের ভবিষ্যৎ কি হবে এ চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটছে। তাই আমার স্বামীর শহীদের মর্যাদাসহ রাষ্ট্রের কাছে সহযোগিতা কামনা করছি। এ ব্যাপারে রোকেয়া আক্তার শাম্মীর পিতা আব্দুস সাত্তার সরকার বলেন, শেখ হাসিনা সরকার পতনে একদফা আন্দোলনে গিয়ে আমার মেয়েজামাই সোহেল রানা পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। এই হত্যার বিচারসহ মেয়েটার ভবিষ্যৎ বিষয়ে পাশে দাঁড়ানোর দাবি করছি।